হাইব্রিড ঢেঁড়স চাষ

ঢেঁড়স চাষের জন্য উষ্ণ জলবায়ু প্রয়োজন। শুষ্ক জমিতে ভাল জন্মে। দোআঁশ ও বেলে দোআঁশ মাটি ঢেড়স চাষের জন্য সবচেয়ে উপযোগী। তবে দো-আঁশ মাটি ঢেঁড়সের জন্য সর্বোৎকৃষ্ট। পানি নিষ্কষণের সুবিধা থাকলে এঁটেল মাটিতে চাষ করা যায়। স্বাভাবিক অবস্থা প্রায় বছর বছরই ঢেড়স চাষ করা সম্ভব। কিন্তু জৈব সার প্রয়োগ করতে হবে।ঠিকানা বেলে মাটিতেও এর চাষ করা যায়। মাটি সুনিকাশিত প্রয়োজন।

চাষের উপযুক্ত জমি তৈরি ও বীজ বপন:

ঢেঁড়স চাষ করার সময় গভীরভাবে চাষ ও মাটি  ঝুরঝুরে করে নিতে হবে। এক বা একআধিক বীজ বপনের মিটার প্রস্থর জন্য মিড়ি বেড তৈরি করতে হবে। অতিরিক্ত মিড়ির মাঝখানে ৩০ সেমি। প্রস্থ পিলি বা নালা রাখতে হবে। আমাদের দেশের সাধারনত সারা বছরই ঢেড়স চাষ করা যায়। গ্রীষ্মকালে ঢেঁড়সের চাষ করা হয়। আমাদের দেশ রাজ্য থেকে জুলাই মাস পর্যন্ত ঢেঁড়স লাগানো হয়। ফাল্গুন মাস থেক চৈত্র ও আশ্বিন মাস থেকে কার্তিক মাস বীজনার উপযুক্ত সময়। প্রতি হেক্টরে বাপনের জন্য ৪-৫ কেজি শব্দ ১২-২০ গ্রাম/শত অংশের বীজ প্রয়োজন। বীজনার আগে ২৪ ঘণ্টা ভিজিয়ে নিতে হবে। বীজ ৪৫ সেন্টিমিটার রাস্তাঘাট ২-৩ টি করে বীজ বুনতে হবে। বাপনের পর পানি সেচ আবশ্যক। চারা গজানোর পর প্রতি গর্তে একটি করে ব্র্যান্ড-সবল চারা বাকি চারা গর্ত থেকে উঠিয়ে ফেলতে হবে।

সার/ব্যবস্থাপনা:

জমি ইউরিয়া সার বাদে বাকি সব সার মাটির সাথে ভালোভাবে মিস্রন  করতে হবে। সার মেশানোর ১০ থেকে ১৫ দিন পর জমিতে ঢেড়স বীজ বপন করতে হবে।বাকি  ইউরিয়া সার  দুই কিস্তিতে প্রয়োগ করতে হবে।

সারে পরিমানঃ১)গোবর/কম্পাস সার চুন- ৩-৪ টন/ একর

২)ইউরিয়া- ৮০ কেজি/ একর

৩)টিএসপি- ১০০ কেজি/ একর

৪)এমওপি- ৮০ কেজি/ একর

৫)জিঙ্ক সালফেট- ৪ কেজি/ একর

সেচ ও পানি নিষ্কাশন:

আগাম মৌসুমে ঢেঁড়স চাষে পানি সেচ বিশেষ প্রয়োজন হতে পারে। মাটির প্রকারভেদ অনুযায়ী ১০/১২ দিন পর সেচ প্রয়োজন। খরা প্রয়োজন অনুযায়ী সেচ দিতে হবে। প্রতি কিস্তি সার প্রয়োগের উপর ভিত্তি সেচ দিতে হবে।

আগাছা ও নিড়ানি:

গাছের প্রাথমিক বিকাশের সময় নিড়ানি দিয়ে আগাছা পরিষ্কার করতে হবে। জমি সব সময় আগাছামুক্ত রাখতে হবে। পানি সেচের উপর ভিত্তি করে ‘জো বাস্তব কোদাল দিয়ে মাটির চাটা ভেঙ্গে দিতে হবে। মাটির ভিতরে আলো-বাতাস ব্যবহার করতে পারে এবং মাটি অনেকদিন রস ধরে রাখতে পারে।

পোকামাকড় ও রোগদামন:

ঢেঁড়সে ফল সিদ্রকারী পোকা ঢেঁড়সে সবচেয়ে বেশি বেশিক্ষতি করে। এ পোকা নিয়ন্ত্রনের জন্য প্রোমেম প্রতি পানিতে ১ গ্রাম গ্রাম স্প্রে করা যেতে পারে। এই পোকা ডিম থেকে বাদামি রঙের কীড়া বের  করে ডগা বা কিচির ফলে আক্রমণ করে। কীড়া ডঃ মিশে পড়ায় নরমের অংশ কুরে খায়। মুসলিম ডগা নেতিয়ে পড়ে ও শুকিয়ে যায় ফলে গাছের বৃদ্ধি ব্যাহত হয়। এছাড়াও জ্যাসিড, জাব পোকা, সাদা মাছি, ছাতার পোকা, লাল গান্ধী ইত্যাদি পোকাও গাছের ক্ষতি করে। এছাড়াও মোজাইক ও পাতায় দাগ রোগও দেখা যায়। মোজাইক অসুস্থতা চারা বা পাতা ফেলতে হবে।

বীজ বোনার ৬-৮ সপ্তাহের মধ্যে এবং ফুল ফোটার ৩-৫ এর মধ্যে আসা শুরু হয়। এর ফলে অনেক বেশি ১০ বেশি ফল হলে আঁশময় এবং মান গুণমান দিয়ে নিকৃষ্ট হতে শুরু করা। ফল যত হারভেস্ট/ সংগ্রহ করা হয় গাছ থেকে বেশি ফল পাওয়া যায়।তাই আমাদের দেশে  হেক্টরপ্রতি ১৪ থেকে ১৬ টন গড়ে ঢেঁড়স ওঠানো ম্ভাব হয়।

শেয়ার করুনঃ