ছাদ বাগানে গাছের সুস্থ বৃদ্ধির জন্য সার প্রয়োগ অপরিহার্য। তাই সার মাটিতে পুষ্টি ও গুনাগুন সরবরাহ করে, যা গাছের শিকড়, পাতা, ফুল ও ফলের বৃদ্ধিতে সাহায্য করে থাকে ।
ছাদ বাগানে কেন সার দরকার?
আপনার ছাদ বাগান চোখ জুড়ানো সবুজ, কিন্তু ফলন তেরান হয় না? পাতা ঝরে যায়, ফুল কোম ফোটে ? ছাদ বাগানে সার দেওয়া কেন এত জরুরি এবং সঠিক সার দিয়ে আপনি কীভাবে আপনার সবুজ স্বপ্নকে বাস্তবতায় পরিণত করতে পারেন। ছাদে মাটি প্রাকৃতিক পরিবেশের মতো পুষ্টি লাভ করে না। তাই সূর্যের তাপ, বাতাস ও বৃষ্টির প্রভাব কম থাকে। ফলে, মাটির পুষ্টি হিন হয়ে যায়। ছাদে মাটির পরিমাণ সীমিত। তাই গাছপালার বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি এই সীমিত মাটি থেকেই সংগ্রহ করতে হয়। পতিটি গাছের ফুল ও ফলনের জন্য বিশেষ ধরনের পুষ্টি লাগে। তাই আমরা সার এই পুষ্টির চাহিদা পূরণে সাহায্য করে।
ছাদ বাগানে গাছের বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন ধরণের সারের প্রয়োজন হতে পারে, যেমন:
- নাইট্রোজেন (N): নাইট্রোজেন গাছের পাতা ও কাণ্ডকে বৃদ্ধি দেয়। এটি প্রাইমারি সার হিসেবে ব্যবহৃত হয়। নাইট্রোজেন ধারণ করা যায় সারের একাধিক রূপ, যেমন ইউরিয়া, অ্যামোনিয়া, ও নাইট্রোজেন প্রস্তুত করার অনেক অন্যান্য উপায়।
- ফসফরাস (P): ফসফরাস গাছের বৃদ্ধি ও প্রস্তুতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এটি জড়তাত্ত্বিক কাজে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
- পোটাশিয়াম (K): পোটাশিয়াম গাছের জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটি মাইক্রোনিউট্রিএন্ট সার। এটি গাছের প্রতিষ্ঠান ও ফুল প্রস্তুতির জন্য প্রয়োজনীয়।
- ক্যালসিয়াম (Ca): ক্যালসিয়াম গাছের স্থিতিশীলতা এবং পাতার রোধকতা বাড়ায়।
- ম্যাগনেসিয়াম (Mg): ম্যাগনেসিয়াম গাছের প্রতিষ্ঠানের অংশ হিসেবে কাজ করে এবং প্রতিষ্ঠানের কাজের অনেক
জৈব সারঃ
জৈব সার হল প্রাকৃতিক উপাদান থেকে তৈরি সার, যা মাটির স্বাস্থ্য ও উর্বরতা বৃদ্ধি করে থাকে । এটি গাছের পুষ্টি জোগায়, মাটির মধ্যে উপকারী জীবজগতকেও সমৃদ্ধ করে। থাকে সাধারণ জৈব সারের মধ্যে রয়েছে:
- গোবর: চিরাচলিত পদ্ধতি, গোবরের পচা অংশ মাটির জন্য মহা-খাদ্য।
- কম্পোস্ট: বাড়ির রান্নাঘরের অবশেষ, পাতা, কাঠের টুকরো ইত্যাদি পচিয়ে তৈরি সার।
- সবুজ সার: ঝরণ পড়া পাতা বা ঘাস ইত্যাদি মাটির সাথে মিশিয়ে দিয়ে প্রাকৃতিক সার তৈরি করা হয়।
- হাড়ের গুঁড়ো: প্রাকৃতিক ক্যালসিয়ামের উৎস, গাছের শক্তিশালী বৃদ্ধিতে সহায়ক করে হাড়ের গুঁড়ো ।
এই সারগুলি গাছের প্রোটিন এবং অন্যান্য জৈব অংশের উৎপাদনে জন্নো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। গাছের বৃদ্ধি ও স্বাস্থ্যের জন্য এই সারগুলির উপস্থিতি করা প্রয়োজনীয়। তবে, সঠিক পরিমাণে এবং সঠিক সময়ে সার প্রয়োগ করাই গুরুত্বপূর্ণ হবে । গাছের প্রতিষ্ঠান, প্রতিফলন, ও গাছের আবশ্যিক অভাবগুলি বিবেচনা করে সারের প্রয়োজনীয় সঠিক পরিমাণ নির্ধারণ করা উচিত ।
কোন ধরনের সার কখন ব্যবহার করবেন?
১ঃ গাছ লাগানোর সময়: গাছ লাগানোর সময় জৈব সার ব্যবহার করা ভালো। এতে গাছের শিকড় দ্রুত বিকশিত হতে সাহায্য করে।
২ঃ বৃদ্ধির সময়: গাছের বৃদ্ধির সময় রাসায়নিক সার ব্যবহার করা যেতে পারে। এতে গাছ দ্রুত বৃদ্ধি পাবে এবং পাতা-ফুল-ফল বেশি হবে।
৩ঃ ফল ধরার সময়: ফল ধরার সময় জৈব-খনিজ সার ব্যবহার করা ভালো। এতে ফলের আকার ও গুণমান বৃদ্ধি পাবে।
সার ব্যবহারের সঠিক পদ্ধতি কী?
ছাদ বাগানে সার ব্যবহারের ক্ষেত্রে কিছু বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করা প্রয়োজন। কারণ, অতিরিক্ত সার ব্যবহার ছাদ ও মাটির জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।
ছাদ বাগানে সার ব্যবহারের সঠিক পদ্ধতি:
১. মাটি পরীক্ষা: সার ব্যবহারের আগে মাটির পুষ্টি পরীক্ষা করে নিন। এতে মাটিতে কোন পুষ্টির ঘাটতি আছে তা জানা যাবে এবং সে অনুযায়ী সার ব্যবহার করা যাবে।
২. সার নির্বাচন: ছাদ বাগানের জন্য জৈব সার ব্যবহার করা সবচেয়ে ভালো। জৈব সার মাটির উর্বরতা বৃদ্ধি করে এবং দীর্ঘমেয়াদী পুষ্টি সরবরাহ করে। তবে, দ্রুত ফলনের জন্য রাসায়নিক সার ব্যবহার করা যেতে পারে।
৩. সার প্রয়োগের পরিমাণ: সারের নির্ধারিত পরিমাণ ব্যবহার করুন। অতিরিক্ত সার ব্যবহার গাছের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। সারের প্যাকেটের নির্দেশাবলী অনুসরণ করে সঠিক পরিমাণ সার ব্যবহার করুন।
৪. সার প্রয়োগের পদ্ধতি: গাছের গোড়ায়: সার গাছের গোড়ায় ব্যবহার করুন এবং পাতায় যেন না লাগে সেদিকে খেয়াল রাখুন।
মাটিতে মিশিয়ে: সার মাটিতে ভালোভাবে মিশিয়ে দিন।
পানিতে মিশিয়ে: তরল সার পানিতে মিশিয়ে গাছে সেচ দিতে পারেন।
৫. সার প্রয়োগের পর:সার ব্যবহারের পর মাটিতে হালকা করে জল দিন।
সার প্রয়োগের পর কিছুদিন গাছের যত্ন নিন।
সার দেওয়ার সময় কী কী বিষয়ে সতর্ক থাকবেন?
ছাদ বাগানে সার দেওয়া গাছের জন্য অপরিহার্য, তবে সঠিকভাবে না করা হলে তা ক্ষতিকর হতে পারে। নিচে কিছু বিষয় উল্লেখ করা হল যা ছাদ বাগানে সার প্রয়োগের সময় সতর্ক থাকা উচিত:
ছাদ বাগানের জন্য বিশেষভাবে তৈরি সার ব্যবহার করুন। গাছের ধরন এবং তার পুষ্টির চাহিদা বিবেচনা করে সার নির্বাচন করুন। রাসায়নিক সারের পরিবর্তে জৈব সার ব্যবহারের চেষ্টা করুন।
বৃষ্টির পর বা ভেজা মাটিতে সার প্রয়োগ করুন। গরমের সময় সার প্রয়োগ করা এড়িয়ে চলুন। গাছের বৃদ্ধির বিভিন্ন পর্যায়ে বিভিন্ন ধরণের সার প্রয়োগ করুন।
সারের নির্দেশাবলী সাবধানে পড়ুন এবং সঠিক পরিমাণ ব্যবহার করুন। অতিরিক্ত সার ব্যবহার গাছের ক্ষতি করতে পারে। সার প্রয়োগের পর মাটিতে হালকা করে জল দিন।
সার প্রয়োগের সময় হাতে গ্লাভস এবং মুখে মাস্ক ব্যবহার করুন। সার শিশু ও পোষা প্রাণীর নাগালের বাইরে রাখুন। সার প্রয়োগের পর সাবধানে হাত ধুয়ে ফেলুন।
সঠিক ভাবে সার প্রয়োগের আগে মাটি পরীক্ষা করে নিন।প্রতিদিন সার প্রয়োগ করার পরিবর্তে, প্রয়োজন অনুসারে সার প্রয়োগ করুন। জৈব সার ব্যবহার করলে মাটিতে জৈব পদার্থের পরিমাণ বৃদ্ধি হয় । গাছের পাতা ও কাণ্ডের অবস্থা দেখে সার প্রয়োগের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করুন।
উপসংহারঃ
ছাদবাগানে সুন্দর করে সার পরিবেশন করে আপনাদের মাঝে উপস্থাপন করলাম। অসাধারণ লেগেছিল আসলে বাড়ির ছাদে বাগানে গাছ দেখতে খুব ভালো লাগে। । এবং সময় সুযোগ হলে বাসায় ছাদে পরিবার পরিজন নিয়ে ছাদবাগান তৈরি করতে পারেন ।আমি মনে করি বাসাই পরে থাকা ছাদে ছাদবাগান করে নিয়মিত সার ও পরিচর্যা দিয়ে পরিবারের সজন দের মুখে হাঁসি ফুটানো সম্ভব। তাহলে আজ এ পর্যন্তই থাক ।সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন। বেশি বেশি করে ছাদবাগান তৈরি করুন।