বর্তমানে অনেকেই ছাদ বাগানে কৃষিকাজ করে প্রচুর অর্থ উপার্জন করছেন। অনেকেই মনে করেন ভালো জমি, ভালো সেচের ব্যবস্থা, গাছপালা ও অন্যান্য জিনিস চাষের জন্য প্রয়োজন। কিন্তু আজকাল এই জিনিসগুলি ছাড়াও আপনি আপনার বাড়ির যে কোনও পাত্রে বা বাড়ির ছাদে যে কোনও গাছ লাগাতে পারেন। তবে এ ব্যাপারে বেশ কিছু নিয়ম রয়েছে। আজকের প্রতিবেদনে জানাবে কীভাবে বাসার ছাদে সুস্বাদু আঙ্গুর চাষ করবেন? আপনার কাছে অবাক লাগলেও দিল্লির এক ব্যক্তি আসলে এমন কাজই করেছেন। সঠিকভাবে যত্ন নিলে আঙ্গুর ফলানো বেশ সহজ। এক্ষেত্রে কতগুলো বিষয় মনে রাখতে হবে।

বিজনেস আইডিয়াঃ চাকরির চিন্তা না করে এই ব্যবসা শুরু করুন,   ছাদে আঙ্গুর চাষ করে আয় হবে অনেক টাকা।

আঙ্গুর চাষ একটি লাভজনক কৃষি ব্যবসা হতে পারে যদি সঠিক পদ্ধতিতে করা হয়। আঙ্গুর চাষের জন্য কিছু মূলধন এবং নির্দিষ্ট কিছু জলবায়ু ও মাটির প্রয়োজন হয়। নিচে আঙ্গুর চাষের বিস্তারিত পদ্ধতি আলোচনা করা হল:

প্রথমে বীজ থেকে আঙ্গুর রোপণের সময় যত্ন নিতে হবে। দ্রুত ফলন পেতে হলে নার্সারী থেকে চারা এনে বাড়ির যেকোনো পাত্রে লাগাতে হবে। এই গাছটি সঠিকভাবে পরিচর্যা করলে তিন বছরের মধ্যেই ফল ধরতে শুরু করবে।

আরেকটি বিষয় মনে রাখতে হবে যে, নার্সারী থেকে গাছ কেনার সময় অবশ্যই গাছটি স্বাস্থ্যসম্মত কিনা তা নিশ্চিত করতে হবে। এই চাষে উপকরণ হিসেবে 20% বালি, 30% কম্পোস্ট এবং 50% মাটি ব্যবহার করতে হবে। আর বড় হওয়ার সাথে সাথে এমন পাত্রে রাখতে হবে। সূর্যের আলো ভালোভাবে পড়ে এমন জায়গায় গাছ লাগাতে হবে। গাছের প্রতিদিন প্রায় 6 থেকে 7 ঘন্টা সূর্যালোক প্রয়োজন। এর সাথে পটাশিয়াম ও লবণ সার প্রয়োগ করতে হবে।আঙ্গুর চাষ একটি লাভজনক কৃষি ব্যবসা হতে পারে যদি সঠিক পদ্ধতিতে করা হয়। আঙ্গুর চাষের জন্য কিছু মূলধন এবং নির্দিষ্ট কিছু জলবায়ু ও মাটির প্রয়োজন হয়। নিচে আঙ্গুর চাষের বিস্তারিত পদ্ধতি আলোচনা করা হল:

জলবায়ু এবং মাটি

1. জলবায়ু :

আঙ্গুর গাছ সাধারণত গরম ও শুষ্ক জলবায়ুতে ভালো হয়।আঙ্গুরের জন্য ১৫-৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা আদর্শ।বৃষ্টিপাত বেশি হলে ফলের মান কমে যেতে পারে, তাই শুষ্ক মৌসুমে চাষ করা উত্তম।

2. মাটি :

   আঙ্গুর চাষের জন্য দোআঁশ মাটি সবচেয়ে ভালো।মাটির pH ৬.৫-৭.৫ হলে আঙ্গুর চাষের জন্য উপযোগী।মাটির নিষ্কাশন ব্যবস্থা ভালো হতে হবে, কারণ জলাবদ্ধতা আঙ্গুর গাছের জন্য ক্ষতিকর।

চারা প্রস্তুতি

1. চারা নির্বাচন  :

উচ্চ ফলনশীল এবং রোগ প্রতিরোধী জাত নির্বাচন করুন।চারা রোপণের আগে মাটির সাথে ভালভাবে মিশে যায় এমন জৈব সার প্রয়োগ করতে হবে।

2. রোপণ  :

আঙ্গুরের কাটিং (কাটিং) বা গ্রাফটিং পদ্ধতিতে রোপণ করা যায়।কাটিং করার জন্য, ১৫-২০ সেমি দৈর্ঘ্যের ডাল কাটতে হবে এবং ৩-৪টি গিঁট থাকতে হবে।

সার এবং পানি প্রদান

1. সার প্রয়োগ :

প্রতি বছর নিয়মিত জৈব সার ও রাসায়নিক সার দিতে হবে।নাইট্রোজেন, ফসফরাস, এবং পটাশিয়াম প্রয়োগ করতে হবে।প্রতি ৩-৪ মাস অন্তর অন্তর গাছের গোড়ায় মাটি খুঁড়ে জৈব সার মেশাতে হবে।

2. সেচ:

আঙ্গুর গাছের শিকড় গভীরে যায়, তাই গভীর সেচ প্রয়োজন।শুষ্ক মৌসুমে প্রতি সপ্তাহে একবার সেচ দিতে হবে।বর্ষাকালে সেচ কম দিতে হবে এবং মাটির জলাবদ্ধতা রোধ করতে হবে।

যত্ন এবং রোগ ব্যবস্থাপনা

1. পাহারা  :

গাছের গোড়ায় আগাছা জন্মাতে না দেওয়া। নিয়মিত পোকামাকড় ও রোগ নির্ণয় করে সঠিক ব্যবস্থা নেওয়া।

2. রোগ ও পোকামাকড়   :

আঙ্গুরের সাধারণ রোগ হল ডাউন মিলডিউ, পাউডারি মিলডিউ এবং গ্রে মোল্ড।রোগপ্রতিরোধক স্প্রে ব্যবহার করতে হবে।নিয়মিত গাছ পরিদর্শন করে পোকামাকড় দেখা দিলে ব্যবস্থা নিতে হবে।

ফসল তোলা এবং বাজারজাতকরণ

1. ফসল তোলা :

আঙ্গুর ফল সাধারণত ১০০-১৫০ দিন পরিপক্ক হয়।ফলের রঙ এবং স্বাদ দেখে ফসল তোলা হয়।সকালবেলা বা সন্ধ্যায় ফসল তুলতে হবে।

2. বাজারজাতকরণ :

আঙ্গুরের ভালো বাজারজাতকরণ করতে হলে ফলের গুণগত মান ভালো রাখতে হবে।তাজা আঙ্গুর সংরক্ষণ করতে হলে ঠাণ্ডা স্থানে রাখতে হবে।

উপসংহার

আঙ্গুর চাষে সঠিক যত্ন ও নিয়ম মেনে চললে তা অত্যন্ত লাভজনক হতে পারে। আঙ্গুরের বিভিন্ন জাত রয়েছে, এবং চাষ পদ্ধতির একটু পার্থক্য থাকতে পারে, তাই চাষ শুরুর আগে স্থানীয় কৃষি বিশেষজ্ঞের সাথে পরামর্শ করা ভাল।

শেয়ার করুনঃ