বাংলাদেশে ফলের মধ্যে আম এবং লিচু অত্যন্ত জনপ্রিয়। বাংলাদেশে বিভিন্ন জাতের আম এবং লিচু পাওয়া যায়, যা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে জন্মায় গাছের ফল ফাটা আমাদের দেশে আম-লিচু চাষের প্রধান বাধা। । আম এবং লিচু উভয়ই গ্রীষ্মকালীন ফল এবং সেগুলি সাধারণত মে থেকে জুলাই মাসের মধে পাওয়া যায়।
আম
আম বাংলাদেশের জাতীয় ফল এবং দেশের প্রায় সব অঞ্চলেই আমের চাষ হয়। এর মধ্যে রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নাটোর, ও দিনাজপুর অঞ্চলের আম বিশেষভাবে প্রসিদ্ধ। বাংলাদেশের জনপ্রিয় আমের জাতগুলির মধ্যে রয়েছে:
** ল্যাংড়া
** হিমসাগর
** ফজলি
** আম্রপালি
** গোপালভোগ
# লিচু
লিচুও বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ গ্রীষ্মকালীন ফল। এটি প্রধানত দিনাজপুর, ময়মনসিংহ, রাজশাহী, এবং গাজীপুর অঞ্চলে চাষ হয়। বাংলাদেশের কিছু জনপ্রিয় লিচুর জাত হল:
** বোম্বাই
** চায়না থ্রি
** মাদ্রাজি
** বেদানা
ফলের মান নিয়ন্ত্রণ এবং বিপণনঃ
বাংলাদেশে আম এবং লিচুর চাষে যথাযথ পরিচর্যা এবং আধুনিক কৃষি পদ্ধতির ব্যবহার বাড়ছে, যা ফলের গুণগত মান ও উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি করছে। তাছাড়া, দেশীয় বাজারের পাশাপাশি বিদেশে রপ্তানির জন্যও উন্নত মানের ফল উৎপাদনে জোর দেওয়া হচ্ছে।
সংরক্ষণ এবং প্রসেসিংঃ
ফলগুলির সংরক্ষণ ও প্রক্রিয়াজাতকরণ প্রযুক্তির উন্নয়নেও মনোযোগ দেওয়া হচ্ছে, যাতে এগুলি দীর্ঘ সময় ধরে তাজা থাকে এবং বছরব্যাপী প্রাপ্য হয়। আম ও লিচু থেকে বিভিন্ন প্রক্রিয়াজাত পণ্য যেমন আমসত্ত্ব, আমের জুস, লিচুর জুস, এবং লিচুর সংরক্ষিত খাবার তৈরি করা হয়।
বাংলাদেশে আম এবং লিচু নিয়ে বিভিন্ন ধরনের মেলা ও প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়, যেখানে চাষিরা তাদের উৎপাদিত ফল প্রদর্শন এবং বিক্রয় করেন সেখানে দেকা যাই অনেক সমায় ফল ফেটে জাই । এসব উদ্যোগ চাষিদের উৎসাহিত করে পারছে না এবং তাদের আয় বৃদ্ধিতে সহায়ক হয় কম ।গাছের ফল ফাটা আমাদের দেশে আম-লিচু চাষের প্রধান বাধা। এতে আম-লিচু চাষীরা অনেক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন। আম-লিচুর ফল ফেটে যাচ্ছে! অনেকেই জিজ্ঞাসা করেছেন কী করবেন। খুঁজে বের কর:-
লিচু ফল ফেটে রোগ বিভিন্ন কারণে হতে পারে। বাংলাদেশে চাষ করা লিচুর মধ্যে বোম্বাই লিচুতে ফল পচনের প্রকোপ সবচেয়ে বেশি।
লিচু ফল ব্লাইট বিতরণ:
আগাম জাতের লিচুতে ফল ফাটার সমস্যা বেশি দেখা যায়। সেই কারণগুলির মধ্যে রয়েছে।
১. দীর্ঘ খরা, শুষ্ক ও গরম আবহাওয়ার পর হঠাৎ বৃষ্টি হলে রোগটি ছড়িয়ে পড়ে।
২. বেলে দোআঁশ বা পলি মাটির পানি ধারণ ক্ষমতা খুবই কম, তাই এই ধরনের মাটিতে লিচুর বাগান করলে ফল ফেটে যাওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।
৩. এছাড়াও লিচু বাগানের মাটিতে বোরন ও ক্যালসিয়ামের অভাব থাকলে এ রোগ দ্রুত ছড়ায়।
লিচু ফ্রুট ব্লাইট রোগের লক্ষণ:
১. দীর্ঘ সময় ধরে খরা চলতে থাকলে ফলের বাইরের চামড়া শক্ত হয়ে যায়।
২. পরবর্তীতে হঠাৎ বৃষ্টি হলে ফলের বৃদ্ধি শুরু হয় অর্থাৎ লিচুর পাল্প দ্রুত বৃদ্ধি পায়।
৩. লিচুর চামড়া ফেটে যায় কারণ বাইরের চামড়া শক্ত হয় এবং ফলের ভিতরের অংশের অনুপাতে দ্রুত বৃদ্ধি পায় না।
৪. লিচু গাছের ফল ফাটার প্রক্রিয়া খুব দ্রুত হয় এবং ফাটল স্থানটি দ্রুত রোগজীবাণু দ্বারা আক্রমণ করতে পারে। লিচু ফল ফাটার প্রতিকার:
১. লিচু গাছকে বছরে ৩টি কিস্তিতে দিতে হবে অর্থাৎ বর্ষার শুরুতে, বর্ষার শেষে এবং গাছে ফুল আসার পর শেষ কিস্তিতে গাছের বয়স অনুযায়ী জৈব ও রাসায়নিক সার দিতে হবে। সুষম পরিমাণে
২. শুকনো মৌসুমে, লাচু গাছে ফল ধরার সময় থেকে ১০-১৫ দিন পর নিয়মিত সেচ দিতে হবে।
৩. সেচ প্রদানের পর, প্রয়োজনে গাছের গোড়া মালচ বা খড় দিয়ে ঢেকে দিন।
৪. প্রতি বছর প্রতিটি গাছের গোড়ায় ক্যালসিয়াম সার (ডোলোচুন – ৫০ গ্রাম) প্রয়োগ করা উচিত।
৫. ফল বৃদ্ধির সময়, জিঙ্ক সালফেট ১০ গ্রাম/লিটার জলে মিশিয়ে ২১ দিন পর গাছে স্প্রে করতে হবে।
৬. গুটিবসন্তের পরপরই প্ল্যানোফিক্স বা মিরাকুলান প্রতি ৪. ৫ লিটার পানিতে ২ মিলি হারে স্প্রে করতে হবে।
৭. বোরিক অ্যাসিড বা সলুবর বোরন ২ গ্রাম/লিটার জলে মিশিয়ে ১০-১২ দিনের ব্যবধানে ৩ বার গাছে স্প্রে করতে হবে।
আমের ফাটা রোগের সমাধান:
আম ফেটে যাওয়ার বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই কারণ শারীরবৃত্তীয়। বিশেষ করে আম গাছে পানি লাগাতে সমস্যা হলে এই সমস্যা হয়। এটি গরম এবং ঠান্ডা আবহাওয়ার কারণেও হতে পারে। এই কারণে, সময়মত সেচ এবং যত্ন দ্বারা এই সমস্যা মোকাবেলা করা যেতে পারে।
বিশেষ করে রাতে কম তাপমাত্রা এবং দিনের তীব্র গরমের মতো পরিস্থিতিতে আম-লিচুর শুঁটি ঝরে পড়ার বা ফেটে যাওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। এ কারণে বাগানের মাটি সবসময় ভালো অবস্থায় রাখতে হবে।এবং নিয়মিত পরিচ্ছা করতে হবে ।