জৈব সার কিভাবে তৈরি ও ব্যবহার করতে হয়?
জৈব সার হলো এমন একটি প্রাকৃতিক সার, যা গাছের পুষ্টি জোগাতে এবং মাটির স্বাস্থ্য বজায় রাখতে সহায়তা করে। এটি রাসায়নিক সার থেকে অনেক বেশি নিরাপদ, পরিবেশবান্ধব এবং দীর্ঘমেয়াদে মাটির উর্বরতা ধরে রাখতে সাহায্য করে।
কী কী উপাদান দিয়ে জৈব সার তৈরি হয়:
- গোবর
- রান্নাঘরের বর্জ্য (সবজি খোসা, চা পাতা, ডিমের খোসা)
- গাছের শুকনো পাতা
- খড়কুটো
- কলাগাছ বা কলাপাতা
- মাছের আঁশ বা হাড়
- পশু-বর্জ্য
- ছাই ও কাঠের গুঁড়ো
জৈব সার তৈরির পদ্ধতি:
পদ্ধতি ১: কম্পোস্ট সার তৈরি
- একটি গর্ত খুঁড়ে বা বড় পাত্র ব্যবহার করে তার তলায় কিছু শুকনো খড় বিছিয়ে দিন।
- এরপর স্তরে স্তরে রান্নাঘরের বর্জ্য, পাতা, গোবর, ছাই ইত্যাদি দিন।
- মাঝে মাঝে কিছুটা মাটি ও পানি ছিটিয়ে দিন।
- প্রতি ৫-৭ দিন পরপর নেড়ে দিন যাতে পচন ত্বরান্বিত হয়।
- ১.৫–২ মাস পরে সেই উপাদান গন্ধহীন ও গাঢ় বাদামি হলে সার হিসেবে ব্যবহারযোগ্য হবে।
পদ্ধতি ২: ভার্মি কম্পোস্ট (কেঁচো সার)
- একটি ছায়াযুক্ত জায়গায় বালু ও মাটির মিশ্রণ তৈরি করুন।
- তার ওপর জৈব বর্জ্য দিন এবং কেঁচো ছেড়ে দিন।
- ৪০–৫০ দিনের মধ্যে কেঁচো এই বর্জ্য খেয়ে সার তৈরি করে।
ব্যবহার পদ্ধতি:
- চারা রোপণের আগে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দিতে হবে।
- গাছের গোড়ার চারপাশে ছিটিয়ে দিতে হবে।
- ১৫–৩০ দিন অন্তর প্রয়োগ করলে ভালো ফল পাওয়া যায়।
জৈব সারের উপকারিতা:
- মাটির জৈব পদার্থ বৃদ্ধি পায়
- পানি ধরে রাখার ক্ষমতা বাড়ে
- গাছের শিকড় মজবুত হয়
- পোকা-মাকড় ও রোগ প্রতিরোধে সহায়ক
জৈব সার তৈরি সহজ, সাশ্রয়ী এবং পরিবেশবান্ধব। ঘরোয়া বর্জ্য কাজে লাগিয়ে সার বানালে একদিকে যেমন খরচ বাঁচে, অন্যদিকে পরিবেশও পরিষ্কার থাকে।